মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ময়লার ঝুড়ি, চেয়ারের কাভার, লেগিংস, মুখোশ!
মাথার খুলি দিয়ে তৈরি হয়েছে বাটি! স্তন দিয়ে বেল্ট! মনে হয় কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ? নাহ। সিরিয়াল কিলারের কাজ।
১০, ৭০, ১০০, ১৭৫, ২২০, ৩০০ এগুলো নিছক সংখ্যা নয় সিরিয়াল কিলারদের কাছে, এগুলো এক একটা মৃত মানুষের অস্তিত্ব। যাদেরকে তারা খুন করেছে শুধু মাত্র নিজের মানসিক শান্তির জন্য।
“শয়তানকে সাথে নিয়ে আমি জন্মগ্রহণ করেছি”—কথাটা যে বলেছে তার নাম হারমান ওয়েবস্টার মাজেট। মাজেটকে মনে করা হয় আমেরিকার শুরুর দিকের সিরিয়াল কিলারদের পথ প্রদর্শক। সে ২৭ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও তার খুনের সংখ্যা ২০০-এর অধিক বলেই ধারণা করা হয়…
Azmin Akther Eva –
গতপরশু হাসপাতালে রুগী আর বাচ্চা সামলাতে সামলাতে শেষ করছি বইটি, আলহামদুলিল্লাহ….
তবে লেখনীর ধাঁচ যেন এখনও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রত্যেকটি খুনের ঘটনা মনে পড়লে এখনও গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। ইতিহাসের সব কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের কথকতা লেখক তুলে ধরেছেন বইটিতে। যারা ছিলো বিকৃত মস্তিষ্কে। ক্রমিক খুনিদের বেশিরভাগই একাকী জীবন যাপন করত। আবার কেউ কেউ সমাজের সবার সাথে মিশে থাকে সরলতার মুখোশ পড়ে। এই সব খুনিরা প্রখর বুদ্ধি সম্পন্ন। একজন সিরিয়াল কিলার নির্দিষ্ট সময় পরপর একই উদ্দেশ্যে একই উপায় অবলম্বন করে মানুষ খুন করে মানসিক প্রশান্তির জন্য।
.
বইটিতে প্রায় ৫১ জন পুরুষ এবং ১৪ জন নারী সিরিয়াল কিলারদের জীবনী ও খুনের ধরণ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। একেকটি খুনের ঘটনা পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল আমি সবকিছু বাস্তবেই উপলব্ধি করছি। এতোটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম বইয়ের ভেতরে। তাদের খুনের ধরণ এতোটাই লোমহর্ষক ছিল যে তা সাধারণদের কল্পনারও বাহিরে। তাদের শিকারের বেশির ভাগ হয় অল্প বয়সী ছেলে-মেয়ে, নারী, বাস্তহীন গরীব মানুষজন। খুনের অস্ত্র হিসাবে কেউ ব্যবহার করে পাথর বা হাতুড়ি কেউবা বন্দুক। কেউ বা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। কেউ বা প্রথমে ধর্ষণ করে তারপর ছুরিঘাত বা গুলি করে। কেউ কিশোর দের নির্মম নির্যাতন করত তারপর অন্ডকোষ ও গলা কেটে ফেলত। কেউ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে দেহটাকে করে নয় টুকরো।
সোস্যাল মিডিয়া, কিছু ম্যাগাজিন এবং বই থেকে অনেক আগেও দেশ-বিদেশের নানা ক্রমিক খুনিদের সম্পর্কে জেনেছি আমি। ‘ক্রমিক খুনি’ বইটি থেকে আরো অনেকটা জানলাম। যা আমাকে আরও সতর্ক থাকতে উদ্ভুত করছে। কারণ এখনও প্রতি নিয়ত খুনিদের এসব কার্যকলাপ ঘটেই চলেছে।
লেখক দায় স্বীকারে বলেছেন বইটি সিরিজ আকারে প্রকাশিত হবে। সিরিজের প্রথম পর্ব হচ্ছে ‘ক্রমিক খুনি’।
এখন আমি দ্বিতীয় পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি….. প্রজন্ম পাবলিকেশন এবং Monowarul Islam কাছে অনুরোধ দ্বিতীয় পর্বের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য। অগ্রীম দ্বিতীয় বইটির জন্য শুভকামনা রইল। আশা করি ওটা আরো বেশি আকর্ষণীয় হবে।
এক নজরে_____________
বইঃ ‘ক্রমিক খুনি’
লেখকঃ মনোয়ারুল ইসলাম
প্রকাশনীঃ প্রজন্ম পাবলিকেশন
প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরি
পৃষ্ঠাঃ ১২০
মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা
প্রকাশকালঃ সেপ্টেম্বর ২০২১