সেই প্রাচীন কাল থেকে আজ অবধি চলছে ভালো এবং মন্দের মধ্যকার লড়াই৷ আপনার যদি এসকল বিষয়ে আগ্রহ থাকে, তাহলে বইটি আপনার জন্যেই।
বইটিতে লেখক চিহ্নিত করেছেন লুসিফেরিয়ান তথা শয়তানের উপাসকদের৷ তারা আসলে কারা, কোথা থেকে এসেছে, কেন এসেছে, কী চায়, ইত্যাদি এই বইয়ের প্রধান আলোচ্য বিষয়৷
জানতে পারবেন কীভাবে তারা মানবজাতির ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে৷ বইটিতে সুবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে ফ্রিম্যাসন, ইলুমিনাতি, নাইট ট্যাম্পেলারসহ বেশ কয়েকটি গুপ্ত সংগঠনের পরিচয় ও কার্যাবলি সম্পর্কে৷ আর বর্তমানে তারা কী কী ভয়ানক অপকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের এজেন্ডাসমূহ কী, তাদের লক্ষ্য কী, তাদের হয়ে কারা কাজ করছে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের ইশারায় চলে এবং ভবিষ্যতে তারা কী করবে ও করতে পারে তার বর্ণনা দিয়ে গেছেন এক এক করে৷
তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের যুদ্ধগুলোর পিছনের কথা, ফ্যাসিবাদ, পুঁজিবাদের আসল রূপ, অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থার ছদ্মবেশী মুখোশ, জনসংখ্যা কমানোর এজেন্ডা ও পর্দার আড়ালের গল্প, বিষাক্ত খাবার, ভ্যাকসিন, টিকা, মেডিক্যাল ডেথ ইন্ডাস্ট্রি, মুসলিম খেলাফত ধ্বংস, সোভিয়েত গঠন, ইন্টারনেটের গোপন কথা, আয়রন মাউন্টেন, গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্যসন্ত্রাস, পর্ণগ্রাফি, ইত্যাদি বিষয়ও বিস্তারিত উঠে এসেছে একে একে৷
অন্যদিকে ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডার আসলে কী, সেকুলারিজম ও নাস্তিকতার আড়ালে কী চলে, তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত লক্ষ্য ও গোপন এজেন্ডাসমূহ কী কী—যা আমাদের থেকে মানবতা কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে, আমাদেরকে মেশিনে প্রতিস্থাপিত করছে এবং ধ্বংস করছে সমস্ত সৃষ্টিকে—তা জানা যাবে এই বইয়ে৷ অন্তত একজন মানুষ হিসেবে যা আপনার জানা প্রয়োজন৷
Kulsuma Mily –
#বুক_রিভিউ
ভূমিকা-
——–
পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে শুরু হয় শয়তানের কুকর্ম। শয়তান সব সময়ই চায় আস্তিক জনগোষ্ঠীকে টেনেটুনে নাস্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত করতে। শয়তানিক পুরোহিতদের দ্বারা মানুষ কে প্রকৃতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে সেই উদীয়মান ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে। বাস্তবিক অর্থে তাদের কিছু দল রয়েছে তারাই হলো ইলুমিনাতি এজেন্ডা। যাদের কাজ প্রকৃতির বাস্তবতা কে নাচক করে দেওয়া।
ইলুমিনাতি কি বা কারা-
———————–
ইলুমিনাতি হচ্ছে সেই গোপন সংস্থা যা ‘ Bank Of International Settlement ‘- এর নিয়ন্ত্রণকর্তা আটটা পরিবার নিয়ে গঠিত। তাদের উত্তরসূরিরাও এই পরিবার গুলো থেকেই নির্বাচিত হয়। তাদের অগ্রদূতরা হচ্ছেন ফ্রিম্যাসন নাইট ট্যাম্পার – যারা ব্যাংকিং ধারণার প্রবর্তন ঘটিয়েছিলেন৷ তারা ‘ বন্ড মার্কেট ‘ সৃষ্টি করে পুরো ইউরোপীয়ান অভিজাতদের নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন যুদ্ধঋণ প্রদানের মাধ্যমে৷
‘ ইলুমিনাতিরা ‘ সমস্ত লুসিফেরিয়ান গোপন সংস্থা গুলোর শাসক হিসেবে কাজ করে। এর শিকড় বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আটলান্টিসের ‘ গার্ডিয়ানস অব লাইট ‘, সুমেরিয়ান ‘ দ্য ব্রাদারহুড অব স্নেক ‘, আফগানিস্তানের ‘ রসহানিয়া ‘, মিশরীয় রহস্য স্কুল, ‘ জেনোসিস’ পরিবার — যারা রোমান সম্রাজ্য শাসন করে এসেছে এবং যিশু খ্রিস্টকে ক্রুশে ঝুলিয়ে দিয়েছে, তারা সবাই এক। লুসিফেরিয়ানদের রক্তবীজ এদের সবার মধ্যে নিহিত।
গ্রন্থ পর্যালোচনা-
—————-
আমেরিকান দু’জন লেখক ডিন হ্যান্ডারসন ও জিন হ্যান্ডারসন লিখিত ‘ ইলুমিনাতি এজেন্ডা ‘ গুপ্ত গোষ্ঠী ও সংগঠন ভিত্তিক একটি গ্রন্থ। যেখানে আলোচনা করা হয়েছে ইলুমিনাতি এজেন্ডাসমূহের কার্যক্রম সম্পর্কে। ইলুমিনাতিদের বিভিন্ন গোপন সংস্থা থাকে যার দ্বারা দ্রুত পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় তাদের মিশন গুলো ছড়িয়ে যেতে থাকে। তারা এক জায়গায় বসে সামাজিক, আর্থ সামাজিক, ব্যবসা বানিজ্য ভিত্তিক ব্যাপার গুলো খুব সুক্ষ্ম ভাবে কিছু প্রটোকল দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। লুসিফেরিয়ানরা মানুষের উপর তাদের ক্ষমতা ও আধিপত্য ধরে রাখার জন্য দিনের পর দিন নানা রকম প্রটোকল জারি করে।
তাদের ব্যবসায়ীক পরিকল্পনায় ধ্বংস ও মৃত্যু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারা এক জাতির সঙ্গে অন্য জাতিকে দ্বন্দে জড়ানোর জন্য উস্কানিমূলক প্রয়োগ করে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনগণের ব্রেইন ওয়াশ করা, জনগণ কে নিয়ন্ত্রণ করা এসবই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
বইটি কেন পড়া উচিত-
———————–
বইটিতে লেখক চিহ্নিত করেছেন লুসিফেরিয়ান তথা শয়তানের উপাসকদের। তারা আসলে কারা, কোথা থেকে এসেছে, কেন এসেছে, কি চায়, ইত্যাদি এ বইয়ের প্রধান আলোচ্য বিষয়।
বইটি পড়ার পরে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে জানতে পারবে, কিভাবে তারা মানবজাতির ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছে, ইলুমিনাতি গুপ্ত গোষ্ঠী বর্তমানে কি কি অপকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের এজেন্ডাসমূহ কি, তাদের লক্ষ্য কি, কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের ইশারায় চলে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের যুদ্ধগুলোর পিছনের কথা, ফ্যাসিবাদ, পুঁজিবাদের আসল রুপ, বিষাক্ত খাবার, ইন্টারনেটের গোপন কথা, গোয়েন্দা নজরদারি, পর্ণগ্রাফি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে।
আলোচনা – সমালোচনা-
————————-
প্রজন্ম প্রকাশনীর বই মানেই ভিন্ন ধাঁচের ছোঁয়া। ইলুমিনাতি এজেন্ডা সম্পর্কে জানার আগ্রহ নেই এমন একটি মানুষও পাওয়া যাবে না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের কাছে ইলুমিনাতি অনুবাদটি যুগোপযোগী একটি বই। যেটি পড়ার মাধ্যমে মানুষ নতুন কিছু জানতে পারবে বুঝতে পারবে। অনুবাদক প্লাবন কুমার দারুণ সাবলীল এবং সহজ শব্দে উপস্থাপন করেছেন। বইটির প্রচ্ছদ মাশা আল্লাহ বেশ আকর্ষণীয়। মলাট পেপারব্যাক, পৃষ্টা গুলো দীর্ঘ মেয়াদী।
ব্যক্তিগত অভিমত-
——————-
‘ ইলুমিনাতি ‘ শব্দটার সঙ্গে পরিচয় প্রায় অনেক বছর ধরে তবে এই শব্দটা সব সময়ই প্রতিটি মানুষের কাছে রহস্যময়। ইলুমিনাতি আসলে কি বা কারা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়নি কখনো। সৌভাগ্যক্রমে প্রজন্ম পাবলিকেশনের মহৎ উদ্যোগে সবার মতোই আমারও সেই অজানা বিষয়টি জানার সুযোগ হয়েছে। বইটিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ইলুমিনাতি কারা, তাদের কার্যক্রম, তাদের অসাধুতা সম্পর্কে দারুণ ভাবে উপস্থাপন করেছে।
উক্তি-
——
বর্তমানে আমরা সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে আছি। তবে এগুলোও এক সময় কেটে যাবে। এক সময় আলো আসবেই। অন্ধকার উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
আমাদের শক্তি অবশ্যই একীভূত করতে হবে, বিভক্ত নয়। যদি আমরা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে চাই, সমৃদ্ধ ও অভাবমুক্ত বিশ্ব চাই, তাহলে এর কোনো বিকল্প নেই৷ একত্রতাই কিন্তু প্রকৃতির পছন্দ; বিশৃঙ্খলা নয়।
আমরা সকলে সমান। পুরুষ – মহিলা, সাদা – কালো, সমকামী, পাথর, বাতাস, পানি সকলে মিলে আমরা এক। আল্লাহর রাজত্বে আমরা সকলেই তার খুব প্রিয়।
বই পরিচিতি-
বইঃ ইলুমিনাতি এজেন্ডা
লেখকঃ ডিন ও জিন হ্যান্ডারসন
অনুবাদকঃ প্লাবন কুমার
প্রকাশনীঃ প্রজন্ম পাবলিকেশন
প্রকাশকালঃ আগস্ট ২০২১
প্রচ্ছদ মূল্যঃ ২৫০৳
পৃষ্টা সংখ্যাঃ ১৫০
ক্যাটেগরিঃ নন ফিকশন