এডওয়ার্ড স্নোডেন: এক সাহসী প্রযুক্তি বিপ্লবীর গল্প
এডওয়ার্ড স্নোডেনকে নিশ্চয়ই চেনেন। তিনি সেই প্রযুক্তি বিপ্লবী, যিনি এনএসএ’র কর্মকর্তা থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নজরদারির বিষয়টি ফাঁস করেছিলেন। তার লেখা বই ‘পার্মানেন্ট রেকর্ড’ শুধু তার জীবনীই নয়, বরং আমাদের ডাটা নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে।
‘পার্মানেন্ট রেকর্ড’ বইয়ের মূল বার্তা কী
এই বইতে দেখানো হয়েছে কিভাবে গোপনে আপনার ডিভাইস থেকে সব ডাটা এনএসএ’র সার্ভারে জমা হয়। আপনার ডিভাইসের মাধ্যমে ভিডিও রেকর্ডিং ও অডিও মনিটরিং—সবই সম্ভব এবং হচ্ছে।
স্নোডেনের মতে, টেকনোলজিক্যালি “ডিলিট” বলতে কিছু নেই। এটি কেবল একটি মিথ যা কম্পিউটার আপনাকে আশ্বস্ত করার জন্য দেখায়।
ডিভাইস থেকে ডাটা কিভাবে এনএসএ সার্ভারে যায়
ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময়, আপনার ডিভাইস নানাভাবে তথ্য পাঠায়। ছবি, ভিডিও, টেক্সট, কল—সব ধরনের তথ্য সার্ভারে সংরক্ষিত হতে পারে।
ডিলিট আসলে কী করে—মিথ বনাম বাস্তবতা
আমরা যখন কোনো ফাইল ডিলিট করি, তখন মনে করি সেটি চিরতরে মুছে গেছে। কিন্তু বাস্তবে এটি কেবল Hidden হয়ে যায়। ফাইলটি ডিস্কের কোথাও না কোথাও থেকে যায়। আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম ডেটা সম্পূর্ণ মুছে ফেলতে পারে না।
হার্ডডিস্কের ফার্মওয়্যার ও ডেটা সংরক্ষণের রহস্য
হার্ডডিস্কের ফার্মওয়্যার এমনভাবে কাজ করে যাতে কোনো ডাটা পুরোপুরি সরানো না হয়। ফাইল মুছে ফেললে শুধু সেই জায়গাকে নতুন ডাটা লেখার জন্য খালি বলে চিহ্নিত করে।
কেন ডিলিট করা ফাইল সহজে ফিরে আসে
হার্ডডিস্কে ডাটা রাখা হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মেমোরি সেল বা মেমোরি অ্যাড্রেস-এ। প্রতিটি সেলে হেক্সাডেসিমেল ভ্যালু আকারে তথ্য থাকে। যখন আপনি ফাইল ডিলিট করেন, তখন মূল তথ্য সেই সেলে থেকে যায়—শুধু সেই সেলটি নতুন তথ্য লেখার জন্য খালি হয়ে যায়।
এই কারণেই রিকভারি সফটওয়্যার দিয়ে মুছে যাওয়া ফাইল ফেরত আনা সম্ভব।
ওভাররাইটিং প্রক্রিয়া ও ডাটা রিকভারি সীমাবদ্ধতা
যদি ডিলিটের পর নতুন ফাইল সেই সেলের ওপর লেখা হয় (যেমন ছবি তোলা, নতুন ফাইল কপি করা), তাহলে পুরনো তথ্যের ওপর নতুন হেক্সাডেসিমেল ভ্যালু বসে যায়। এতে রিকভারি করলেও ফাইল আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্নোডেনের সতর্কবার্তা: আপনার তথ্য আসলে কতটা নিরাপদ?
স্নোডেন তার বইয়ে বলেন—কম্পিউটারে একটি ফাইল টেবিল বা ম্যাপ থাকে, যা অনেকটা বিশাল লাইব্রেরির মত। আপনি ডিলিট করলেও বই (ডাটা) থেকে যায়, কেবল ইনডেক্স মুছে যায়।
ডিলিট করা মানে শুধু ফাইল লুকানো, কিন্তু যারা জানে কোথায় খুঁজতে হবে, তাদের কাছে এটি দৃশ্যমান।
শেষ কথা
‘পার্মানেন্ট রেকর্ড’ শুধু একটি জীবনী নয়, বরং প্রযুক্তি-নির্ভর জীবনে আমাদের গোপনীয়তা কতটা ভঙ্গুর তা জানানোর এক সতর্কবার্তা। ডিলিট মানে হারিয়ে যাওয়া নয়—এটি শুধু আড়ালে যাওয়া।
আরো জানতে বইটি অর্ডার করুন: